আমাদের পথচলা, আমাদের পথে (পর্ব ৬)

লেখাটি ব্লগ | হিউম্যানস অব ঠাকুরগাঁও এ সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়। আমাদের পথচলা আমাদের পথে (পর্ব ৫) গত বছর বইমেলার সেদিনের ঘটনার পর ‘ব্যক্তিগত উন্নয়ন’ সংক্রান্ত কাজে ‘ভয়ঙ্কর’ পর্যায়ের ব্যস্ত থাকবার কারণে খুব একটা লেখালেখি করা হয়নি। তবে এবার একটা সায়েন্স ফিকশন বের করছি। নাম দিয়েছি ‘২২১৯ সালের ঢাকা’। খুবই সাদামাটা, অন্ত:সারশূণ্য এবং স্পয়লার সমৃদ্ধ নাম! বইটার প্রিঅর্ডার চলছে রকমারিতে। বইয়ের ফ্রন্ট ফ্ল্যাপে দুই বন্ধুর অনলাইন কথোপকথনঃ : ‘দোস্ত কী খবর?’: ‘ভালো দোস্ত। আচ্ছা জুরাইনের দিকে একটা ফ্ল্যাট পাওয়া যাবে? এই বাসার ভাড়াটা খুব কম। ভাড়াটা বেশি হলে নতুন একটা বাসায় উঠব।’: ‘আমি নিজেও খুঁজতেসি দোস্ত, গত মাসে বাড়িওয়ালাকে বললাম বাড়ি ভাড়া বাড়ানোর কথা। উনি সামনের বছরের জানুয়ারির কথা বলেছে। দেখি সে পর্যন্ত। না বাড়ালে ছেড়ে দিব শালার। আমার বাসা ভাড়া দেড় লাখ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের পথচলা, আমাদের পথে (পর্ব ৫)

লেখাটি ব্লগ | হিউম্যানস অব ঠাকুরগাঁও এ সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়। আমাদের পথচলা আমাদের পথে (পর্ব ৪) এবছর বইমেলায় একটি কবিতার বই বের করেছি। যা এবারে আমার প্রকাশিত একমাত্র গ্রন্থ। বইয়ের নাম- ‘বেতাল টুয়েন্টি ফাইভ’। বইমেলা ছাড়াও রকমারি এবং পুস্তকবিডির অনলাইন বাজারে বইটি এই মুহূর্তে বেস্টসেলার বলে জেনেছি! বুদ্ধিমান পাঠক বইটার নাম দেখে আমার সস্তা চালাকি ধরে ফেলবেন। জি হ্যা। নামটি এসেছে ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি ‘ গ্রন্থ থেকে। বেতাল পঞ্চবিংশতি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত প্রথম গ্রন্থ। মৌলিক রচনা বললে সম্ভবত ঠিক হবে না। অনুবাদ গ্রন্থই বলা চলে। ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যাসাগর লল্লুলাল রচিত হিন্দি “বেতাল পচীসী” গ্রন্থের আলোকে এই গ্রন্থ রচনা করেন। আপাতদৃষ্টিতে অনুবাদ মনে হলেও তিনি হুবহু অনুবাদ না করে মূল গ্রন্থের আলোকে এটি রচনা করেন। তবে আমি শুধু নামটাই ধার করেছি। আমার কবিতায় রাজা...বাকিটুকু পড়ুন

সহোদর

অনেক বছর আগের কথা। তাই বলে প্রাচীন কালের গল্প না। এই ধরুন ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকের ঘটনা। রাত আটটা কি নয়টা বাজে সবে। ছোট্ট একটা মফস্বল এলাকা। সে সময়ের প্রেক্ষাপটে বিদ্যুতের যেমন অবস্থা থাকার কথা তেমনই ছিল। সন্ধ্যার পরে টানা দুই ঘন্টার মত বিদ্যুত নেই। একজন মধ্যবিত্ত পিতা তার দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে গল্প করতে বসেছেন। ‘কারেন্ট’ নেই এবং বাড়িতে হাড়িকেনের সংখ্যা মাত্র একটি বলে পড়াশোনা আপাতত বন্ধ তাদের। একজন পড়ে তৃতীয় শ্রেণীতে। আরেকজন দ্বিতীয় শ্রেণীতে। দুজনে আধাশোয়া হয়ে আছে বিছানায়। হারিকেন জ্বলছে নিভু নিভু। সল্প আলোতে ঘরময় যেন একটা রহস্যময় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তবে সহোদর দুজনকে তাদের পিতা কোন রহস্যগল্প শোনাচ্ছেন না। শোনাচ্ছেন একটা সাধারণ গ্রামের সাদামাটা দুই ভাইয়ের গল্প। তাদের পিতা সেদিন যে গল্পটা দু’ভাইকে শুনিয়েছিলেন সেটা এরকমঃ একটা...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল কবিতার ময়নাতদন্ত

একদিন এক ছেলে ভুলে একটা কবিতা লিখে ফেলেছিল। কবি হবার পেছনে নাকি ভীষণ কষ্ট থাকা লাগে, বেদনা লাগে, আত্মার আকুল আকাঙ্ক্ষা লাগে। তার ক্ষেত্রে উল্টোটা হল। কবিতা লেখার পরদিন থেকে তার দুর্দিন শুরু হল! প্রথম প্রথম সে বুঝতে পারেনি কষ্ট বাড়ছে কেন। সে যেহেতু স্বাভাবিক সুখী অবস্থায় থেকে কবিতা লিখে ফেলেছিল, প্রকৃতি তাঁর ভারসাম্য রক্ষা করবার জন্য ছেলেটাকে শাস্তি দিতে শুরু করল। সেদিন থেকে সে আর কথা বলত না। বললেও খুব অল্প। দিনের বেশিরভাগ সময় একা একা চলাফেরা করতো। কিন্তু একা কেন চলছিল এটা বুঝতে সময় লেগেছিল ওর। কবিতাটা লেখা হয়েছিল কার্তিকের কোন এক শেষরাতে। বাহিরে মুহুর্মুহু মৃদু সুগন্ধি হাওয়া বইছিল। মনে হচ্ছিল দূরের খুব দূরের কোন বাগান থেকে শিউলি ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ ভেসে আসছে। যেন শুধুমাত্র তারি জন্য এতো পথ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের পথচলা, আমাদের পথে (পর্ব ৪)

আমাদের পথচলা আমাদের পথে (পর্ব ৩) ঈদের পরে পুরোদমে অফিস চলছে। নিরুও ব্যস্ত। কোর্টে যায় মাঝে মাঝে। ওখানে ওরা কি কাজ করে এ ব্যাপারে আমার ধারণা শূন্য। আমি অফিস করি সেই যন্ত্রণাদায়ক সাইকেলটা নিয়ে। এর মাঝে আলাদা করে তিন দিন অফিস ফাঁকি দেওয়া হয়ে গেছে। গত পড়শু এমডি স্যার ডেকে পাঠালেন। বললেন, তোমার যাতায়াতের ঠিক নাই কেন? আমি সঙ্গে করে একটা দরখাস্ত নিয়ে গিয়েছিলাম। তৎক্ষণাৎ স্যারের সামনে পেশ করলাম। তিনি বললেন, তোমার এই ছুটির (তাঁর উচ্চারণটা হয় ‘সুটির’) দরখাস্ত আমি এক শর্তে গ্রহণ করতে পারি, যদি তুমি আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারো। আমার ধুকপুকানি বেড়ে গেল। একটা ঢোক গিলে বললাম, জি স্যার। আচ্ছা স্যার। তিনি বললেন, আজ আমাদের ‘সুটি’ ও ভাই, আজ আমাদের ‘সুটি’ ছড়াটা কার? নজরুলের না শামসুর...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের পথচলা, আমাদের পথে (পর্ব ৩)

আমাদের পথচলা আমাদের পথে (পর্ব ২) পড়শু ঈদ। আজ অফিসে শেষ কর্মদিবস। সবাই খুশি খুশি মনে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে। আমার মন কিছুতেই খুশি হতে পারছে না। এর কারণ দুটো। এক, আমি এখনও স্যালারি পাইনি (বোনাস তো দূর কি বাত)। দুই, এ ঈদে বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না। দ্বিতীয় কারণটা যে প্রথম কারণেরই উপজাত তা আর নিশ্চয়ই বলা লাগে না! অর্থনৈতিক মন্দার পরিণামে বাড়ি যাচ্ছি না আমরা। এ নিয়ে নিরুর খুব একটা মাথাব্যথা হবার কথা না। জানি না কি হবে। ওর ধারণা আজকে অবশ্যই আমাকে হাতে কিছু না কিছু ধরিয়ে দিবেন সেলিম ভাই। সেলিম ভাই আমাদের অফিসের একাউন্টেন্ট। ভদ্র নম্র চমৎকার মানুষ। সারাদিন অনলাইন সংবাদ পোর্টালগুলো পড়েন। অদ্ভুত সে সংবাদ মাধ্যমগুলোর নাম। যেমন, আজকেরতাজাখবর২৪ডটকম। এই পোর্টালগুলোর লোকেরা যেভাবেই হোক নামের সাথে...বাকিটুকু পড়ুন

হাতঘড়ি এবং অন্যান্য

আজ রফিকের ভীষণ মন খারাপ। ওর শখের ঘড়িটা হারিয়ে গেছে বাসায় ফেরার পথে। বাস থেকে নেমেই রফিক বুঝতে পেরেছিল যে ঘড়িটা ‘গেছে’। মোভ্যাডোর খুব দামি একটা ঘড়ি ছিল ওটা। গত জন্মদিনে তার স্ত্রী মিলি তাকে উপহার দিয়েছিল ঘড়িটা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এটা রফিকের জীবনের প্রথম হাতঘড়ি। কাউকে বললে বিশ্বাসই করতে চায় না কথাটা । মিলি বেচারা জানতে পারলে ব্যাপক মন খারাপ করবে। এটার দামও অনেক। হুবুহু ওইরকমই একটা যে কিনে নিবে তাও এই মুহূর্তে সম্ভব না। মিলিকে অনেক অনুরোধ করার পর ও দাম বলেছিল। সাড়ে দশ হাজার টাকা! রফিকের কাছে এতোগুলো টাকা নেই এখন। বাসায় এসে কাপড় বদলে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল রফিক। মন খারাপ হলেই সে এটা করে, মিলির সেটা জানা আছে। অন্যান্য দিন এসে মিলির সাথে একটু...বাকিটুকু পড়ুন