হাতঘড়ি এবং অন্যান্য

আজ রফিকের ভীষণ মন খারাপ। ওর শখের ঘড়িটা হারিয়ে গেছে বাসায় ফেরার পথে। বাস থেকে নেমেই রফিক বুঝতে পেরেছিল যে ঘড়িটা ‘গেছে’। মোভ্যাডোর খুব দামি একটা ঘড়ি ছিল ওটা। গত জন্মদিনে তার স্ত্রী মিলি তাকে উপহার দিয়েছিল ঘড়িটা। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এটা রফিকের জীবনের প্রথম হাতঘড়ি। কাউকে বললে বিশ্বাসই করতে চায় না কথাটা । মিলি বেচারা জানতে পারলে ব্যাপক মন খারাপ করবে। এটার দামও অনেক। হুবুহু ওইরকমই একটা যে কিনে নিবে তাও এই মুহূর্তে সম্ভব না। মিলিকে অনেক অনুরোধ করার পর ও দাম বলেছিল। সাড়ে দশ হাজার টাকা! রফিকের কাছে এতোগুলো টাকা নেই এখন। বাসায় এসে কাপড় বদলে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল রফিক। মন খারাপ হলেই সে এটা করে, মিলির সেটা জানা আছে। অন্যান্য দিন এসে মিলির সাথে একটু...বাকিটুকু পড়ুন

অন্তরালে অন্দরে (১)

আজ মিতুলের ২৭ তম জন্মদিন। অদিতি ওকে স্কাইপ-এ জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছে। অদিতি মিতুলের স্ত্রী। দু’বছর আগে ওদের যখন বিয়ে হল, বিয়ের পরের দিনই অদিতির জিআরই-এর ফলাফল জানা গেল। অদিতি ভয়াবহ রকমের ভালো করেছে। ওর স্কোর তিনশ’ ত্রিশ। অদিতি ভেবে পেল না এতো নম্বর ও কি করে পেল। মিতুল ওকে অনেক অভিনন্দল জানিয়েছিল সেদিন। অদিতি মিতুলকে বলেছিল, আমাদের বিয়েটাই আমার ভাগ্যটা ফেরাল! আমি তো ভেবেছিলাম, তিনশর উপরে পাব না। তুমি আমার জীবনের আশীর্বাদ মিতুল। মিতুল হেসে বলেছিল, কি যে বল! তুমি অত না পড়লে কি এতো ভালো নম্বর পেতে? অদিতি গেল বছরে পিএইচডি করতে নর্থ অ্যামেরিকার একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পারি জমিয়েছে। মিতুল আর অদিতি দু’জন সহপাঠী তুমুল মেধাবী ছিল। কম্পিউটার সাইন্সে পড়া দুজনের ঝোক দুদিকে। অদিতি সারাদিন গবেষণা পত্রে ডুবে...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের পথচলা, আমাদের পথে (পর্ব ২)

আমাদের পথচলা আমাদের পথে (পর্ব ১) স্বপ্নের ঠিক এ পর্যায়ে বুঝতে পারলাম গভীর সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছি, নিরুকে দেখতে পাচ্ছি না। তবে ওর চিৎকার শুনতে পাচ্ছি, ‘মোষের মত ঘুমাচ্ছো কেন, ওঠো। এই ওঠো।’ মোদ্দা কথা, নিরু এক গ্লাস পানি আমার মুখে ছিটিয়ে ঘুম ভাঙানোর তার অভিনব কৌশলটি কাজে লাগাচ্ছিল এতক্ষণ! আমি শান্তভাবে উঠে বসলাম। ঘুমের ঘোরেই কি না জানি না নিরুকে অ্যানিভারসারির শুভেচ্ছা না জানিয়ে বলে বসলাম, ‘শুভ জন্মবার্ষিকী নিরু। জীবন আলোকিত হোক। মঙ্গলময় হোক মুহূর্তগুলো।’ এই লাইন তিনটা আমার বান্ধা লাইন। যে কারো জন্মদিনে অনলাইনে অফলাইনে এই তিন লাইন দিয়ে শুভেচ্ছা জানাই। নিরুর চেহারা অগ্নিমূর্তি ধারণ করল। তবে কিছু বলল না। শুধু বলল আজ কত তারিখ? আমি বললাম, ‘আজ ফেব্রুয়ারির ১৩ তারিখ। বিশ্ব রেডিও দিবস। দেশবরেণ্য অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি কবছর আগে আজকের...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের পথচলা, আমাদের পথে (পর্ব ১)

নিরুর খুব রাগ। খুবই। আজ ওকে বারোটা বাজার ৪০ মিনিট দেরিতে উইশ করেছি দেখে রাতে আর পাশে শুতে দেয়নি! ড্রয়িং রুমে আধাশোয়া হয়ে লিখছি। আমি খুচরা লেখক। হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতিকে স্মরণ করে তার লেখাকে শত ভাগ অনুসরণ-অনুকরণ করে বাজারে ৯ টি বই বের করেছি। আসে পাশে যা দেখি এবং দেখি না, তাই নিয়ে লিখে ফেলি। লেখার মান নিয়ে কোন চিন্তা করি না। কারণ, আমরা যখন ভার্সিটি পড়ুয়া ছিলাম তখন পুটুনদা’ নামে একজন মহান লেখক ‘লেখক হবার ২৩১ টি নিয়ম’ বইয়ের ৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় লিখেছিলেন, লেখার মান বিবেচ্য নয়। আজকের নিম্নমানের চণ্ডাল লেখা কাল হতে পারে হরিশ্চন্দ্র অথবা শ্মশানের শিবের মত মাননীয়। আজকের এই লেখাই হতে পারে কালকের মহাযোগী সম্রাটের শেষ চিঠির মত মূল্যবান। কাল তোমাকে ‘ওরাই’ অর্ঘ্য দান করবে, করবে নান্দী-পাঠ। আমি সেদিন ভেবে...বাকিটুকু পড়ুন

অথবা মহিলা কিংবা মেয়ে নতুবা নারী

আজ মা দিবস। মাকে নিয়ে লিখে, বলে, আবেগ প্রকাশ করে শেষ করা যাবে না। আমার কাছের ভাই-বোন-বন্ধুরা চমৎকার স্মৃতিময় নানান গল্প-ঘটনা লিখেছেন মাকে নিয়ে। আমি অনেক আনন্দ নিয়ে সেগুলো পড়ছি। অনেকেই যেহেতু মাকে নিয়ে গল্প বলেছেন আমি একটু পাশ দিয়ে গিয়ে মা-মেয়ে-মহিলা-নারিদের নিয়ে কিছু গল্প করি। আজ সন্ধ্যায় কুড়িল বিশ্বরোড থেকে একটা বিআরটিসি বাসে উঠলাম; গুলশান অভিমুখে যাত্রা। ডাবল ডেকার তাই পেছনেও মহিলারা বসেন, সামনের একটা অংশেও বসেন। যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে একজন মহিলা উঠে তাদের সিটে বসতে চাইলেন একজন সিট দখলকরা লোকের কাছে। হুট করে সামনে দাড়িয়ে থাকা একজন বলে বসলেন, মেয়েদেরও কস্ট করা উচিৎ, আমরা তাদের মায়ের চোখে দেখে বসতে দিব, তারা কি আমাদের বাবার চোখে দেখে সিট ছেড়ে বসতে দিয়েছে কখনও? তাদের জন্য সংরক্ষিত আসন আছে, আমাদের...বাকিটুকু পড়ুন

Playing with ‘CHROME MUSIC LAB’

গুগল ক্রোম মিউজিক নিয়ে মজা করার জন্য একটা মিউজিক ল্যাব পরীক্ষামূলকভাবে খুলেছে সাম্প্রতিক। সেটা নিয়েই কিঞ্চিৎ খেলা করতে করতে বানিয়ে ফেললাম।  বাকিটুকু পড়ুন

নারী, শ্রদ্ধা তোমার প্রতি

না, ফেইসবুক কাভার ফটো বদলানো তো হল অনেক। অনেকবারই তো এই দিনে কাজী নজরুলের নারী কবিতার ওই বিশেষ দুটি লাইন দিয়ে স্ট্যাটাস দিলাম। নারীবাদী কত ছবি টবি দিয়ে ফেইসবুক টাইমলাইন বোঝাই করে দিলাম। আজ আর না। কট্টরপন্থীদের মত এসব একেবারেই বাদ দিতে বলছিনা। ওসবও অনেককে অনুপ্রেরণা যোগায়। আসুন না সেই সাথে কয়েকটা ভালো কাজ করি, কমপক্ষে করবার চেস্টা করি। বাসায় আপনার মাকে কখনও মুরগির রানটা খেতে দেখেছেন? সবচেয়ে মজার রান্নাগুলো কার পাতে যায় আগে? আমার কিংবা আপনারই, তাই না? আজই করতে হবে এমন না… চলুন একদিন মাকে বলে বসি, আম্মু রানটা তুমিই খাও তো, প্রত্যেকদিন রান ভালো লাগে না। দেখবেন, আপনার মা কেঁদে ফেলেছেন! প্রতিদিন বাসে বসে কাজের উদ্দেশ্যে যখন যাচ্ছি, দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটিকে বা বয়স্ক লোকটাকেই বসতে দেই আমাদের...বাকিটুকু পড়ুন