সহোদর

অনেক বছর আগের কথা। তাই বলে প্রাচীন কালের গল্প না। এই ধরুন ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকের ঘটনা। রাত আটটা কি নয়টা বাজে সবে। ছোট্ট একটা মফস্বল এলাকা। সে সময়ের প্রেক্ষাপটে বিদ্যুতের যেমন অবস্থা থাকার কথা তেমনই ছিল। সন্ধ্যার পরে টানা দুই ঘন্টার মত বিদ্যুত নেই। একজন মধ্যবিত্ত পিতা তার দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে গল্প করতে বসেছেন। ‘কারেন্ট’ নেই এবং বাড়িতে হাড়িকেনের সংখ্যা মাত্র একটি বলে পড়াশোনা আপাতত বন্ধ তাদের। একজন পড়ে তৃতীয় শ্রেণীতে। আরেকজন দ্বিতীয় শ্রেণীতে। দুজনে আধাশোয়া হয়ে আছে বিছানায়। হারিকেন জ্বলছে নিভু নিভু। সল্প আলোতে ঘরময় যেন একটা রহস্যময় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তবে সহোদর দুজনকে তাদের পিতা কোন রহস্যগল্প শোনাচ্ছেন না। শোনাচ্ছেন একটা সাধারণ গ্রামের সাদামাটা দুই ভাইয়ের গল্প। তাদের পিতা সেদিন যে গল্পটা দু’ভাইকে শুনিয়েছিলেন সেটা এরকমঃ একটা...বাকিটুকু পড়ুন

ভুল কবিতার ময়নাতদন্ত

একদিন এক ছেলে ভুলে একটা কবিতা লিখে ফেলেছিল। কবি হবার পেছনে নাকি ভীষণ কষ্ট থাকা লাগে, বেদনা লাগে, আত্মার আকুল আকাঙ্ক্ষা লাগে। তার ক্ষেত্রে উল্টোটা হল। কবিতা লেখার পরদিন থেকে তার দুর্দিন শুরু হল! প্রথম প্রথম সে বুঝতে পারেনি কষ্ট বাড়ছে কেন। সে যেহেতু স্বাভাবিক সুখী অবস্থায় থেকে কবিতা লিখে ফেলেছিল, প্রকৃতি তাঁর ভারসাম্য রক্ষা করবার জন্য ছেলেটাকে শাস্তি দিতে শুরু করল। সেদিন থেকে সে আর কথা বলত না। বললেও খুব অল্প। দিনের বেশিরভাগ সময় একা একা চলাফেরা করতো। কিন্তু একা কেন চলছিল এটা বুঝতে সময় লেগেছিল ওর। কবিতাটা লেখা হয়েছিল কার্তিকের কোন এক শেষরাতে। বাহিরে মুহুর্মুহু মৃদু সুগন্ধি হাওয়া বইছিল। মনে হচ্ছিল দূরের খুব দূরের কোন বাগান থেকে শিউলি ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ ভেসে আসছে। যেন শুধুমাত্র তারি জন্য এতো পথ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধু, বন্ধুত্ব, বন্ধুতা…

জীবনের বর্ণিল গতিপথে সব সময় একটা বিষয় মাথায় রাখা উচিৎ। এ পৃথিবীতে কেউ একা থাকতে আসেনি। যারা সন্ন্যাসী হয়েছেন, তাদের ব্যাপারটা এরকম যে তাঁরা নিজেরাই বেছে নিয়েছেন সে পথ। বাধ্য করা হয়নি তাদের। তাই, সন্ন্যাসী বা একা জীবন বেছে নেওয়া মানুষদের জন্য এ লেখাটি একেবারেই অখাদ্য এবং অনেকটা অনর্থক। কিন্তু যারা জীবনটাকে একটু হেসেখেলে একটু হালকা করেই নিয়ে বাঁচতে চায় তাদেরও দোষ দেওয়া যায় না, তাই না? আমি বলছি বন্ধুত্বের কথা। যেখানে কোন প্রাদেশিক আইন নেই, খাটেনা কোন বাঁধাধরা নিয়মনীতির খেরোখাতার বর্ণমালা। কথাগুলোর সত্যতা নির্ণয় করা যায় একেকভাবে। যেমন বয়স। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে বয়সটা যেন কোন ব্যাপারই না। অনেকের ক্ষেত্রে এটা অবশ্য মনস্তাত্ত্বিক একটা ব্যাপার। কিন্তু ঘুরে ফিরে একই বিষয় দাঁড়ায়। ওই যে, মন! অনেক আগে বয়স যখন অল্প ছিল, কাছের...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের পথচলা, আমাদের পথে (পর্ব ৪)

আমাদের পথচলা আমাদের পথে (পর্ব ৩) ঈদের পরে পুরোদমে অফিস চলছে। নিরুও ব্যস্ত। কোর্টে যায় মাঝে মাঝে। ওখানে ওরা কি কাজ করে এ ব্যাপারে আমার ধারণা শূন্য। আমি অফিস করি সেই যন্ত্রণাদায়ক সাইকেলটা নিয়ে। এর মাঝে আলাদা করে তিন দিন অফিস ফাঁকি দেওয়া হয়ে গেছে। গত পড়শু এমডি স্যার ডেকে পাঠালেন। বললেন, তোমার যাতায়াতের ঠিক নাই কেন? আমি সঙ্গে করে একটা দরখাস্ত নিয়ে গিয়েছিলাম। তৎক্ষণাৎ স্যারের সামনে পেশ করলাম। তিনি বললেন, তোমার এই ছুটির (তাঁর উচ্চারণটা হয় ‘সুটির’) দরখাস্ত আমি এক শর্তে গ্রহণ করতে পারি, যদি তুমি আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারো। আমার ধুকপুকানি বেড়ে গেল। একটা ঢোক গিলে বললাম, জি স্যার। আচ্ছা স্যার। তিনি বললেন, আজ আমাদের ‘সুটি’ ও ভাই, আজ আমাদের ‘সুটি’ ছড়াটা কার? নজরুলের না শামসুর...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের পথচলা, আমাদের পথে (পর্ব ৩)

আমাদের পথচলা আমাদের পথে (পর্ব ২) পড়শু ঈদ। আজ অফিসে শেষ কর্মদিবস। সবাই খুশি খুশি মনে ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে। আমার মন কিছুতেই খুশি হতে পারছে না। এর কারণ দুটো। এক, আমি এখনও স্যালারি পাইনি (বোনাস তো দূর কি বাত)। দুই, এ ঈদে বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না। দ্বিতীয় কারণটা যে প্রথম কারণেরই উপজাত তা আর নিশ্চয়ই বলা লাগে না! অর্থনৈতিক মন্দার পরিণামে বাড়ি যাচ্ছি না আমরা। এ নিয়ে নিরুর খুব একটা মাথাব্যথা হবার কথা না। জানি না কি হবে। ওর ধারণা আজকে অবশ্যই আমাকে হাতে কিছু না কিছু ধরিয়ে দিবেন সেলিম ভাই। সেলিম ভাই আমাদের অফিসের একাউন্টেন্ট। ভদ্র নম্র চমৎকার মানুষ। সারাদিন অনলাইন সংবাদ পোর্টালগুলো পড়েন। অদ্ভুত সে সংবাদ মাধ্যমগুলোর নাম। যেমন, আজকেরতাজাখবর২৪ডটকম। এই পোর্টালগুলোর লোকেরা যেভাবেই হোক নামের সাথে...বাকিটুকু পড়ুন