
আমার গান শোনা পর্বঃ ১
গান শুনতে যে আমার ভালো লাগে এটা বুঝতে পারি প্রথম আমি ক্লাস সিক্স বা সেভেনে। এর আগে গান শোনা বলতে যতটুকু মনে আছে তা হচ্ছে, আমাদের নেকমরদের বাসার সামনের জুতার দোকানগুলোতে বাজানো গানগুলো। অর্থাৎ, সে দোকানি ভাইদের গান শোনার অভিরুচিই ছিল পরোক্ষভাবে আমার গান শোনার ‘টেস্ট’। কিছু গান শোনা হতো বাসার বেশ পেছনে তেলের মিল থেকে; হিন্দিতে বাজানো গানগুলো। ভরদুপুরে হয়তো ঘুমানোর জন্য শুয়েছি, ঘুম আসছে না। শুনতে পাচ্ছি আমির খানের তৎকালের বহুশ্রুত গানগুলো। শুয়ে শুয়ে ঠোঁট মিলাতাম ‘আয়ে হো মেরি জিন্দেগি মে তুম বাহার বানকে, মেরে দিলমে ইউহি রেহেনা, হায়ে…’। আর জুতার দোকানের গানগুলো ছিল আসিফ আকবর, এসডি রুবেল, রবি চৌধুরী, মনির খান, এন্ড্রু কিশোর সর্বোচ্চ আর্কের হাসান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। যার ফলে আমার জিলা স্কুল পড়ুয়া বন্ধু-ছোট ভাইদের তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণিতে আর্টসেলের গান শোনার অভিজ্ঞতা থাকলেও আর্টসেল শব্দবন্ধটার সাথে আমি পরিচিত হই ক্লাস এইটে! ক্লাস ফাইভ অবধি ‘প্রিয় গান কোনটা’ কেউ জিজ্ঞেস করলে ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ বা ‘তুমি অপরূপা’ গানটা দুই লাইন গেয়ে দিতাম!
এরও বহু আগে কিছু গান শোনার কথা মনে পড়ে আমাদের বাসায়। আমার আম্মু আর আন্টি মিলে দুপুরের দিকে ক্যাসেটে কিছু গান ছাড়তো। একটা গানের সুর মাথায় এই মুহূর্তে ঘুরছে কিন্তু গানটার নাম মনে করতে পারছি না। আরও গোটা দুয়েক অদ্ভুত উৎস থেকে গান শোনা হতো। প্রথমটা হচ্ছে নুর সিনেমা হল থেকে মাইকে বাজানো শাকিল-খান-শাবনুর-রিয়াজ-মান্না-ওমর-সানি-মোসুমী-শাকিব-খান প্রমুখদের সিনেমার গান; দিনের নির্দিষ্ট সময়ের শোগুলোতে সিনেমাপ্রেমিদের ‘বই’ দেখার জন্য আহ্বান ছিল সম্ভবত সে গানগুলো। দ্বিতীয়টা হচ্ছে বাৎসরিক নেকমরদ মেলার সার্কাস অথবা যাত্রা থেকে বাজানো উচ্চস্বরের-বেরেওয়াজ-বেসুরা গান! সেসময় চাচা-মামাদের বিয়ের ভিসিডির গানগুলোও মুখস্ত হয়ে যেত দেখতে দেখতে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হয়তো আবাল বৃদ্ধ বণিতারা ভদ্রভাবে খাচ্ছেন, তাদের প্রায় মুখের উপরে উঠে গিয়ে ক্যামেরাম্যান চলছবি নিচ্ছেন। বা ফুলের ভেতর থেকে ভেসে আসছে নববধূর ছবি। আকাশে একখণ্ড মেঘের ভেলায় ভাসছেন বর! আর পেছন থেকে গান বাজছে, ‘হায়ে মেরা দিল, চুরাকে লে গেয়া, চুরানে বালা, মেরা কাতিল…’ না হয় ‘পারদেসি পারদেসি জানা নেহি, তু জানা নেহি…’। এগুলা ছাড়া ধরাবাঁধা কিছু গান ছিল যেগুলো ষোলই ডিসেম্বর, ছাব্বিশে মার্চ বা একুশে ফেব্রুয়ারিতে বেশি বেশি শোনা যেত। হারমোনিয়াম শিখতাম শুধুমাত্র দেশাত্মবোধক গানগুলোর উপর; অন্য গানে বাজানোর কথা মাথাতেই আসতো না! আর বিটিভিতে ব্যান্ডশোগুলো ভালো লাগতো খুব। জেমসের ‘লিখতে পারি না কোন গান’ আর বিপ্লবের ‘দন্ত না মূর্ধন্য’ গানগুলো বিটিভির কল্যাণেই শোনা। তবে নিজের পছন্দমতো যে আমিও গানের ক্যাসেট এনে বাজাতে পারি, এটাও মাথায় আসেনি কোনদিন। তাই এগুলোই ছিল আমার শৈশবের গান শোনার মোটামুটি উৎস।
এবার একদম প্রথম লাইনটার সূত্র ধরে বলি। ক্লাস সিক্সে ভর্তি হলাম ঠাকুরগাঁও জিলা স্কুলে। হোস্টেলে ওঠার পর শোনা শুরু হলো হিন্দি গান। আশেপাশে বড় ভাই-বন্ধুদের ‘অবৈধ’ ওয়াকম্যানের হিসাব নাই। সেসময়ের (২০০৫-০৬) সব থেকে নামজাদা বলিউড অভিনেতা এমরান হাশমি অভিনিত সিনেমার গানগুলো ফাও ফাও শোনা যেত। হোস্টেলের ওয়াশরুম থেকে ফেরার পথে নাজমুল ভাইয়ের রুম থেকে হয়তো শোনা যাচ্ছে আকসারের কোন গান। পরের রুম থেকে আসছে ‘আগার তুম মিল যাও’। আর ক্লাসে গেলে তো কথাই নাই। বন্ধু মনন (Hossain Md. Enayet) একাই যথেষ্ট। এক ‘আশিক বানায়া আপনে’ মননের মুখে শোনা হয়েছে ডজনখানেক বার। ইয়াসিন স্যার আদর করেও ওকে গান গাইতে ডাকতেন আবার অপরাধ করলে শাস্তিস্বরুপও গান গাইতে হতো বেচারাকে! এসব উৎস থেকে সিক্স-সেভেন-এইট প্রচুর হিন্দি গান শোনা হতো।
এই হোস্টেলেই আমার গান শোনার রুচিতে আবর্তন এনে দিলেন শিশির (Sajjad Hossain Shishir) ভাই। ক্লাস সেভেন শেষ মাত্র। হাবিব নামের এক গায়কের ‘শোনো’ অ্যালবামের সব গানগুলো শোনালেন তাঁর ‘অবৈধ’ ওয়াকম্যানে। সেসময় থেকে বাংলা গানে নতুন নতুন (কমপক্ষে আমার কাছে তো নতুনই) যে জনরাগুলো আসা শুরু করল, সেগুলো আগ্রহ নিয়ে শোনা শুরু করলাম। নিজের গান শোনার একটা টেস্ট ডেভেলপ হতে শুরু করল সে সময়টায়। এর মাঝে সহপাঠী আলিফের কাছে আর্টসেল নামের একটা ব্যান্ডের নাম শুনলাম ‘পরথম’। ধীরে ধীরে বাকি ব্যান্ডগুলোর সাথেও পরিচিত হলাম। তাই বলে ভাববেন না, আমি এলআরবি আর মাইলসের গান আগে কখনও শুনিনি! সেসময় এমপিথ্রি নামে যে বস্তু পাওয়া যেত, কষ্ট করে পয়সা জমিয়ে সেটাও একটা কিনে ফেললাম। এর আগে অবশ্য একটা ট্রানজিস্টার ছিল, সেটায় গানের থেকে বেশি বিবিসি শুনতাম!
রবীন্দ্রসঙ্গীত ভালো লাগতে শুরু করে আরও পরে। ইন্টারে পড়ার সময় থেকে। আর ইংরেজি গানগুলোও শোনা শুরু হয় কলেজে থাকতেই। এই দুই বিষয় আর সাম্প্রতিক গানের অভিরুচি নিয়ে আরেকদিন লিখব।
F9fmRe48Wx1
1X8CTM0gIOh
Need a quick link to 368bet? link368bet seems to do the trick. Sometimes those other sites are blocked, so it’s handy to have a backup. Worth bookmarking, yeah? Check out link368bet if you’re having trouble getting through.
35phfunlogin is pretty straightforward. Easy to log in, easy to play. Nothing fancy, but gets the job done! If you like it simple, this is for you. 35phfunlogin